আরও দেখুন
আসন্ন সপ্তাহে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশের সম্ভাবনা রয়েছে, যা মার্কেটের গতিশীলতায় উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে—তবে আসলেই কি তা ঘটবে?
ডোনাল্ড ট্রাম্পের সৃষ্ট ভূরাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার প্রেক্ষাপটে, যা যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্ব অর্থনীতির সম্ভাব্য গতিপথকে অনিশ্চিত করে তুলেছে, বিনিয়োগকারীরা এই সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোজোন, এবং চীন থেকে প্রকাশিতব্য গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদনের ফলাফলের সাহায্যে আগামী দিনগুলোর পরিস্থিতি সম্পর্কে বোঝার চেষ্টা করবে।
এই সপ্তাহের কোন প্রতিবেদনগুলো বেশি গুরুত্বপূর্ণ?
প্রথমত, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মসংস্থান এবং মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন খাতের সূচক, এবং ইউরোজোনের ভোক্তা মূল্যস্ফীতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন। এছাড়াও, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোজোনের জিডিপি প্রতিবেদনগুলোও গুরুত্বপূর্ণ হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন দিয়ে শুরু করলে, পূর্বাভাস অনুযায়ী এপ্রিল মাসে ADP কর্মসংস্থান 123,000 থাকবে, যা মার্চে ছিল 155,000। একইভাবে, যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম বিভাগ 129,000 নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রতিবেদন পেশ করতে পারে, যা মার্চের 228,000 থেকে কম।
এই পূর্বাভাসগুলো যথেষ্ট নেতিবাচক এবং ট্রাম্পের বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধের বাস্তবতাকে প্রতিফলিত করে। এছাড়া, প্রথম প্রান্তিকে জিডিপ প্রবৃদ্ধি 2.4% থেকে 0.2%-এ নামার কথা রয়েছে। অন্যদিকে, ইউরোজোনের জিডিপি 1.0% এর আশেপাশে স্থিতিশীল থাকার কথা।
উৎপাদন খাতের সূচকের ক্ষেত্রে, যুক্তরাষ্ট্রের PMI সূচক এপ্রিল মাসে 50.2 পয়েন্ট থেকে 50.7 পয়েন্টে বাড়তে পারে, তবে ISM সূচক 49 থেকে 48 পয়েন্টে কমতে পারে। চীনের PMI সূচক 50.8 থেকে 49.8 পয়েন্টে নেমে যেতে পারে। ইউরোজোনে PMI সূচক 48.6 থেকে 48.7 পয়েন্টে সামান্য বৃদ্ধির প্রত্যাশা করা হচ্ছে, তবে এটি কোনো বড় প্রভাব ফেলবে না।
মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হবে। ইউরোজোনে কোর CPI বা মূল ভোক্তা মূল্য সূচক বার্ষিক ভিত্তিতে 2.4% থেকে 2.5%-এ বাড়তে পারে, তবে হেডলাইন CPI বা সামগ্রিক ভোক্তা মূল্য সূচক 2.2% থেকে 2.1%-এ কমতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রে PCE মূল্য সূচক (এপ্রিল) এবং এর ফলাফলের দিকেও দৃষ্টি থাকবে। সূচকটি নিম্নমুখী হতে পারে: মূল বার্ষিক PCE সূচক 2.8% থেকে 2.5%-এ এবং সামগ্রিক PCE সূচক 2.5% থেকে 2.2%-এ নেমে আসতে পারে। ব্যক্তিগত ব্যয় 0.4% থেকে বেড়ে 0.6%-এ পৌঁছাতে পারে, তবে আয় 0.8% থেকে 0.4%-এ কমে যেতে পারে।
মার্কেটে কেমন প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে?
ট্রাম্পের ফলে সৃষ্ট অনিশ্চয়তা এই প্রতিবেদনের প্রভাবকে আবারও নষ্ট করে দিতে পারে। তবে সামগ্রিকভাবে, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, এবং ইউরোপ থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বাণিজ্য যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাব দেখা যাচ্ছে, যা উভয় পক্ষকে সমঝোতার পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে—যা ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের চাহিদা বৃদ্ধির একটি ইতিবাচক সংকেত হিসেবে বিবেচনা করা। ইউরোজোনে মুদ্রাস্ফীতি কমে গেলে ইসিবি আরও 0.25% সুদের হার কমাতে পারে, যা ইউরোর ওপর চাপ ফেলবে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতি কমে গেলে ফেডারেল রিজার্ভ মে বা জুন মাসে সুদের হার কমানো পুনরায় শুরু করতে পারে, যা ফরেক্স মার্কেটে ডলারের দরপতন ঘটাবে।
ট্রেজারি ইয়িল্ডের পতন বিনিয়োগকারীদের মনোভাব ইতিবাচক রাখছে এবং স্টক মার্কেটের পুনরুদ্ধার এরই প্রতিফলন। মার্কেটের ট্রেডাররা আশা করছে বেইজিং এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে শুল্ক নিয়ে সমঝোতা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মসংস্থান সংক্রান্ত প্রতিবেদনের ফলাফল দুর্বল হলে ডলার আরও দুর্বল হতে পারে। ডলার সূচক 98.00 লেভেলের নিচে নেমে যেতে পারে।
এই সপ্তাহে স্টক এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি ক্রয়ের সিদ্ধান্ত ইতিবাচক হতে পারে, তবে ফরেক্স মার্কেটে ডলার এবং স্বর্ণ বিক্রির প্রবণতা বাড়তে পারে।
#SPX
S&P 500 ফিউচার্সের CFD কন্ট্রাক্ট $5520.00 রেসিস্ট্যান্স লেভেলের নিচে ট্রেড করছে। এই লেভেল ব্রেক করা হলে $5700.00 পর্যন্ত প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। বাই এন্ট্রি পয়েন্ট হতে পারে $5532.26 লেভেল।
বিটকয়েন
যুক্তরাষ্ট্র-চীনের আরোপিত বাণিজ্য যুদ্ধ শেষ হওয়ার আশায় বিটকয়েনের মূল্য গত সপ্তাহে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এই সপ্তাহেও ইতিবাচভক পরিস্থিতি ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় থাকতে পারে। মূল্য $95000.00 রেসিস্ট্যান্স লেভেল ব্রেক করলে $99400.00 পর্যন্ত প্রবৃদ্ধি হতে পারে। বাই এন্ট্রি পয়েন্ট হতে পারে $95659.57 লেভেল।